এমডি আল মাসুম খান: ২০০৯ সালের পিলখানা ট্রাজেডি মামলার অভিযুক্ত আসামি হিসেবে দীর্ঘ ১৬ বছর সাজা ভোগ করে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মোতাহার ও রবিউল ইসলাম। তাদের ২ জনকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের স্বজনরা। পাশাপাশি উৎসাহ উদ্দীপনায় বরণ করা হয় তাদের।
ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের তৎকালীন বিডিআর সদস্য মোতাহার হোসেন বিয়ের ১৪ দিনের মাথায় আটকা পড়েন পিলখানা ট্রাজেডি মামলায়। তারপর একে একে কেটে যায় ১৬ টি বছর। জুলাই আগস্টের ছাত্র -জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে মুক্তি পান।
মোতাহারের মতোই জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নেংটিহারা গ্রামের বিডিআর সদস্য রবিউল আলম মুক্তি পেয়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। দেড় দশকের অধিক সময়ে হাজত বাস করে পরিবারের মাঝে ফিরে আসায় এলাকার মানুষের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেছে।
তাদের স্বজনরা জানান, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের জীবন থেকে ষোলটি বছর কেড়ে নেওয়ায় নিদারুণ কষ্টের কথা তুলে আবারও কর্ম জীবনে ফেরানোর দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীদের প্রতি।
সদর উপজেলা আওলিয়াপুর ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের সদ্য মুক্তি পাওয়ায় মো. মোতাহার হোসেন ও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নেংটিহারা গ্রামের মো. রবিউল আলম জানান, বিনা দোষে দোষী সাবস্ত করা হয় আমাদের। এত বছর কেড়ে নিয়েছে আমাদের জীবন থেকে তৎকালীন সরকার। যারা প্রকৃত দোষী তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনুক এটা আমরাও চাই । তবে বিনা দোষে যারা জেলা খেটেছে এই ক্ষতিপূরণ কে দেবে। তাই যারা অন্যায় ভাবে সৈনিকদের কারাভোগ করিয়েছে তাদের বিচারের দাবি করেন বর্তমান সরকারের কাছে। একই সঙ্গে চাকরি ফেরতসহ ক্ষতিপূরণ দাবিও করেন তারা।
মুক্তি পাওয়া সাবেক সৈনিকদের মধ্যে মোহাতার হোসেন পিলখানায় মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ও রবিউল ইসলাম সৈনিক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। মোতাহার চাকরি করেন ছয় মাস আর রবিউল চাকরি করেন মাত্র উনিশ দিন। ২০০৯ সালের পরবর্তী সময়ে উপরে মহলে নির্দেশনায় এরপর তাদের কারাগারে একটানা ১৬ বছর আটক করে রাখে বিগত সরকার।
উল্লেখ্য এখনো শত শত বিডিআর সদস্যদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারাগারে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। কারাগারে আটক বিডিআর সদস্যদের পরিবারের নিকট আত্মীয়স্বজন এই প্রতিবেদক কে জানান আটককৃতদের অনেকের দশ বছর ও ৭ বছর সাজা হয়েছিল তবে বিচারহীনতার কারণে তাদেরকে দীর্ঘ ১৬ বছর কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। একই সাথে যে সকল বিডিআর সদস্যদের সাজা শেষ হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।