মৃত্যু
সৌমিত্র চক্রবর্তী
শেষবার জন্মদিন পালনের সময়ে আমার মৃত্যু
হল, হাতের শিরায় ছিল স্যালাইনের সূচ, কানে
পল পল দিল কে পাস, নাক ডুবে ছিল
অক্সিজেনের মুখোশে; আমি মারা যেতেই বহু দূর
থেকে কোনো এক চাঁদ সদাগর বাম হাতে ছুঁড়ে
দিল এক বাসি গাঁদা ফুল, তেঘরিয়া সাম্পানে
প্লাস্টিক দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে মুড়ে আমাকে ভাসিয়ে
দিয়ে একদল বাজপাখি তুমুল হট্টগোলে মদের
বোতল খুলে সেলিব্রেশনে বসে পড়ল; শেষবার
চোখ খুলে আমি পৃথিবীকে চুমু খেলাম
কেমন আছি
সৌমিত্র চক্রবর্তী
কেমন ছিলাম? কে জানে! চক্ষুহীন-আত্মমগ্ন,
হঠাৎ কিসের ছোঁয়া এসে জাগিয়ে তোলে
কে জানে!
যেমন ছিলাম, এদিক ওদিক, আকাশ পাতাল, ধানের গাছ, সূর্যাস্ত সূর্যোদয়,
গভীর অতল জলের মাছ। যেমন ছিলাম-তেমন ছিলাম, সুরকি পথের ছোট্টো নুড়ি, পায়ের ঘায়ে জগৎ চেনা, হরিণ-বাঘ-পুকুর ঘাট, চরকা কাটা চাঁদের বুড়ি।
কেমন ছিলাম? ভাল ছিলাম?
কে জানে!
হঠাৎ কিসের ছোঁয়া লেগে...
কিছু ছবি-একটু গান, হাল্কা কথা ভারী কথা, সংস্কারের আঁতুরকথা-
কোথায় যেন নাড়ীর টান। কিসে যেন সময় কাটে, ঘুনপোকাতে?
পাইনা টের
সময় গুলো কোথায় যে যায়! কোন চুলোতে,
কোন মেলাতে! গল্প শিখি
রাত বেলাতে নিজের মাঝে ডুব দিয়ে।
কেমন ছিলাম! দূর ছাই
সব, যেমন ছিলাম-তেমন ছিলাম।
হঠাৎ কিসের...
দেখতে হবে কেমন আছি, বয়স যেন পর্ণমোচী, পাতার নিচে
পাতার ভ্রুণ, রঙের গায়ে রঙ লাগে। আমি আছি-
আমিও আছি, আছি-আছি-থাকব বলে। এখন আছি, ভাল আছি।
ভাল আছি...! সত্যি আছি!
ভালো আছি? কে জানে...!