ঢাকা | বঙ্গাব্দ

এক হাজার গাছ পুড়ানোসহ প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের অভিযোগ জাবি এস্টেট শাখার বিরুদ্ধে

গত বছরের বর্ষার মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শিমুল, পলাশ, কাঁঠাল, খেজুর, জামরুল, পেয়ারা, বিদেশি গাব, আমলকি, তালের চারাসহ ৩০০০ অধিক গাছ লাগিয়েছিল। এতে সহযোগিতা করে বাংলা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকেরা।
  • আপলোড তারিখঃ 23-01-2025 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 131478 জন
এক হাজার গাছ পুড়ানোসহ প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের অভিযোগ জাবি এস্টেট শাখার বিরুদ্ধে - ছবি: খবর দিনরাত
ad728

আমানউল্লাহ খান, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সম্প্রতি লাগানো এক হাজার গাছের চারা পোড়ানোর অভিযোগ এস্টেট শাখার বিরুদ্ধে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের পদচ্যুত করাসহ ছয় দফা দাবিতে  উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 


আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি)  দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের কার্যালয়ে গিয়ে  স্মারকলিপি জমা দেন তারা। 


গত বছরের বর্ষার মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শিমুল, পলাশ, কাঁঠাল, খেজুর, জামরুল, পেয়ারা, বিদেশি গাব, আমলকি, তালের চারাসহ ৩০০০ অধিক গাছ লাগিয়েছিল। এতে সহযোগিতা করে বাংলা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকেরা। 


শিক্ষার্থীদের বাকি দাবিগুলো হলো- 

সুষ্ঠু তদন্ত করে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের ছবি জনসম্মুখে প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থানায় পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ভাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বনভূমি, সবুজ অঞ্চল বা ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়া চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া, আগুনে যে-যে অঞ্চল পুড়েছে ও যে-যে গাছের ক্ষতি হয়েছে সেসব এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও চাহিদা মোতাবেক এস্টেট অফিসের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ও তাদের লোকবলের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ করাতে হবে এবং আগামী ১ মাসের মধ্যে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে, তদন্ত কমিটিতে বৃক্ষরোপণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ন্যূনতম ৩ জন শিক্ষক ও ১০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ন্যূনতম ১ হাজার বৃক্ষরোপণ করতে হবে 


স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এস্টেট অফিসের যোগসাজশে প্রাণ-প্রকৃতিসমৃদ্ধ বিভিন্ন বনভূমি ও সবুজসমৃদ্ধ এলাকা প্রতিবছর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় বনভূমি ও সবুজভূমির গুরুত্ব অপরিসীম হওয়া সত্বেও এ-বছরও 'ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার' যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের ঝোপঝাড় ও ছোট-বড় গাছ, সুইমিংপুলের পেছনের বিশাল সবুজভূমি, বঙ্গবন্ধু হল মাঠের ডান পার্শ্বে সুবিশাল সবুজভূমিসহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগানো হয়েছে। গত বর্ষায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের কঠোর পরিশ্রম ও সম্মিলিত আর্থিক সহযোগিতায় সারা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ৩ হাজারের অধিক বনজ, ফলজ ও সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষরোপণ করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল-শূন্যতা রোধ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত গরমের কবল থেকে বাঁচার জন্য এই প্রচেষ্টা জারি ছিল। 


বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় বর্বর কাজ বরদাশত করা হবে না বলে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, গাছগুলোও অত্যন্ত স্বাভাবিক ও সুন্দরভাবেই বড় হয়ে উঠছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার মদদে ও সহযোগিতায় এই সব এলাকায় আগুন লাগিয়ে গাছের সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে এই বর্বর ও পরিবেশবিরুদ্ধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণ্য, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়।


এ বিষয়ে দাবি উত্থাপনকারীদের একজন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীম হোসেন বলেন, এস্টেট অফিস থেকে আমাকে বলা হয়েছে তারা এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না। কিন্তু এটা শুধু এবারই যে প্রথম হয়েছে ব্যাপারটা এমন নয়। বছরের পর বছর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বনভূমিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর আগে এমনও হয়েছে আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস ডাকতে হয়েছে। তারা মূলত কাচি দিয়ে ঘাস কাটার পরিবর্তে বিভিন্ন রাসায়নিক পাউডার ও আগুনের সাহায্যে বনভূমিগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আগাছা নিধনের পরিবর্তে তারা সব ধরণের গাছ ধ্বংস করে দেয়। এভাবে প্রাকৃতিক বনভূমি নষ্ট করে তারা বিভিন্ন ছোট ছোট প্রাণী হত্যা এবং সেগুলোর বাসস্থান ধ্বংস করে দিচ্ছে।


অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে এস্টেট শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।



notebook

জাবিতে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রেম বঞ্চিত সংঘের বিক্ষোভ মিছিল