আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৬ শতাংশেরও বেশি কমেছে। গত দুই বছরের মধ্যে সর্বাধিক দৈনিক পতন এটি। গত সপ্তাহান্তে ইরানে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলার পরই এ পতন ঘটে। যদিও ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের কোনো তেল অবকাঠামোতে আঘাত করেনি। এমন লক্ষ্যও ছিল না বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ফিউচার ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৬৭ দশমিক ৩৮ ডলারে স্থির হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট প্রতি ব্যারেল ৭১ দশমিক ৪২ ডলার। গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর জবাব হিসেবে গত শনিবার ভোরে তেহরানের কাছাকাছি এলাকায় আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলো ছিল এ আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। তবে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের এই প্রতিশোধমূলক হামলার আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে তেলের বাজার অস্থিতিশীল ছিল। ইসরায়েল ইরানের তেল অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। ওই সময় ব্রেন্ট প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলার স্পর্শ করেছিল। তখন হোয়াইট হাউস ইসরায়েলকে ইরানের তেল বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য না করার পরামর্শ দিয়েছিল। ইরান তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক–এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রতিদিন ৩০ লাখ ব্যারেলেরও বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে এই উপসাগরীয় দেশ।
ইরানের সামরিক বাহিনীর যৌথ স্টাফ এক বিবৃতিতে জানায় যে, আক্রমণে সীমিত ক্ষতি হয়েছে এবং চারজন নিহত হয়েছে। ওই বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানানো হয়। তবে তেহরান ‘আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি তার দায় স্বীকার করে’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক কার্যক্রমের কারণে জ্বালানি তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই তেলের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার ঝুঁকিও কম। বিশ্লেষকেরা চতুর্থ ত্রৈমাসিকের জন্য ব্রেন্টের মূল্য পূর্বাভাস প্রতি ব্যারেল ৭৪ ডলার থেকে কমিয়ে ৭০ করেছেন। ইরান থেকে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকায়, বাজারের পরবর্তী বড় চালক হতে পারে ওপেকের উৎপাদন হ্রাসের পদক্ষেপ। আগামী ডিসেম্বর থেকে তারা এই পদক্ষেপ নিতে পারে।